লাইব্রেরি

  • প্রতি পৃষ্ঠায়

  • সাহিত্য শ্রেণী

  • অনুক্রম

নূপুরের শব্দ

ভৌতিক, সাহিত্যকর্ম

প্রায় দশ মিনিট ধরে হাঁটছে রাহাত। কোন রিকশা বা ভ্যানগাড়ি রাস্তায় নেই। প্রচণ্ড বিরক্ত সে, কার ওপর বিরক্ত সে নিজেই জানে না। ব্যাগ হাতে নিয়ে সে সামনে এগোতে থাকে। হঠাৎ সে ব্যাপারটা লক্ষ্য করে। নিজের জুতার শব্দ ছাড়াও কোথা থেকে টুংটুং শব্দ ভেসে আসছে। সে দাঁড়িয়ে পরে। এদিক ওদিক তাকায়, অস্বাভাবিক কোন কিছু চোখে পরে না। আবার সে সামনে হাঁটতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রাহাত খেয়াল করে যে শব্দটা নূপুরের শব্দের মতন। সে যখনই সামনে হাঁটছে তখনই পেছন থেকে শব্দ আসছে।

উপাসক

অশরীরী, সাহিত্যকর্ম

আরিফ খন্দকার আবারো সমস্ত ব্যাপারটা খতিয়ে দেখে, কিছু কি চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে কিনা। রাজউক থেকে নেয়া ভবনের তথ্য দেখার সময় চোখ আটকে যায় ভবন মালিকের নামের দিকে। ভবন মালিক ব্যবসায়ী রকিবুল মোস্তফা। দ্রুতই সে ভবনে পৌঁছায়। সটানে গিয়ে সিকিউরিটির অফিসে ঢুকে যায়। পুলিশ দেখে কেউ বাঁধা দেয় না বা দেয়ার সাহস করে না। পুলিশি গলায় ঐ অফিসে ক্যামেরা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করে। উত্তর আসে, "ক্যামেরা আছে তবে মালিকের নির্দেশ ছাড়া দেখানো যাবে না"। গার্ডের কলার ধরে ঝাঁকি দিলেও ভীত মিনমিনে গলায় একই কথা বলতে থাকে। মিনিট বিশেক চেষ্টা করে রাস্তা পাল্টায় এএসআই আরিফ খন্দকার। গার্ডের হাতে তিনটা হাজার টাকার নোট তুলে দেয়, তার সাথে পুলিশি ধমক। ইতস্তত করে গার্ড ফুটেজ দিয়ে দিতে সম্মত হয় তবে প্রায় পা ধরে অনুরোধ করে মালিককে না জানাতে, কিসের যেন তার প্রচণ্ড ভয়।

জীবনের গতি

ভালোবাসার, সাহিত্যকর্ম

ইউনিভার্সিটির পড়ার প্রচণ্ড চাপে সে তার দুইটা টিউশনি ছাড়তে বাধ্য হয়। বাসা থেকে দেয়া হাত খরচা বেশিভাগই খরচ হয়ে যায়। এই বই কেনার জন্য টাকা জন্য মায়ের কাছে হাত পাতলেও মা অপারগ। জানুয়ারি মাসে প্রায় সপ্তাহখানেক মায়ের কানের কাছে প্যানপ্যান ঘ্যানঘ্যান করার পরে শেষ পর্যন্ত সে পাঁচশো টাকা হাতে পায়। তার সাথে বোনাস হিসেবে কান ধরে হ্যাঁচকা টান।

বডিবিল্ডার স্যার

শিক্ষাজীবনের, সাহিত্যকর্ম

ঘড়ির কাঁটা নয়টা পেরোচ্ছে তবু স্যারের দেখা নাই। সোয়া নয়টার দিকে দাঁতের বিজ্ঞাপন করতে করতে স্যারের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম। ক্লাসে এসেই স্যার ল্যাপটপ অন করলো আর ফ্লোর অ্যাটেনডেন্ট এসে ল্যাপটপ প্রোজেক্টরের সাথে কানেক্ট করে দিল। ল্যাপটপ বুট করা শেষ করতেই পুরা প্রোজেক্টর স্ক্রীনজুড়ে ভেসে উঠল সারা গায়ে (সম্ভবত) তেল মাখানো নেংটিপরা এক ভদ্রলোকের ছবি। ক্লাসের সবাই একেবারে হা। এটা দেখে স্যার ভ্যাবাচেগা।

দেশপ্রেমিক প্রোফেসর

শিক্ষাজীবনের, সাহিত্যকর্ম

মিডটার্মে ক্যালকুলাস ক্লাসে ৮৭% এর বেশি ফেল। বাকিদের অবস্থাও তথৈবচ। এটা দেখে স্যার তো আমাদের ওপর বিপুল বিক্রমে চোটপাট দেখালেন। যখন সবাই বলল যে আমাদের অন্য কোর্সের পড়াশোনা আছে ও এই ক্যালকুলাস কোর্সের জন্য সেইগুলোও খারাপ হয়েছে, উত্তর আসলো " সেটা আমার সমস্যা না"। এরপর আবার শুরু হল ক্যালকুলাস বাদ দিয়ে স্যারের গল্পের ও ফাঁকিবাজির ক্লাস, এবং সেমিস্টার ফাইনালের আগে আবার সপ্তাহে ৭ দিন ক্যালকুলাস ক্লাস। এবং যথারীতি ফাইনালে খারাপ রেজাল্ট।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

ব্যর্থতার, সাহিত্যকর্ম

লেকচারারের চাকরি সে হয়ে যাবে সেটা নিয়ে আরিফ বেশ আশাবাদী। লেকচারারের চাকরীটাও আরিফের প্রয়োজন। তার আয় বেশ কিছুটা বাড়বে। বই পড়ুয়া আরিফের চোখে আটকানো অনেক বই ও সুন্দর শেলফ আর টেবিল আরিফ টাকা জমানোর জন্য কিনতে পারছে না। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, জীবনটা একটা ছকে বাধা পরবে। তার জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে অফিসের পেছনে সময় দিতে দিতে, নিজের ব্যাক্তিগত সময় বলে কিছু থাকছে না। তাছাড়া মাথামোটা বস আর তার চামচাদের উৎপাত আর সহ্য করতে হবে না।

ভূত সমাচার

ভৌতিক, সাহিত্যকর্ম

আবার পরিবারের একই আরেকজনের কথা। ইনি আবার একটু বাদর গোছের। পড়াশোনাতে ফাঁকিবাজি, বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজি, রাতবিরাত ঘোরাফেরা। তার বাবা একবার এর গলায় দড়ি লাগিয়ে কোরবানির ছাগলের সাথে খুঁটিতে বেঁধে রেখেছিল। যাই হোক, রাত দেড়টার দিকে আড্ডা শেষ করে বাড়ির পুকুরের পার দিয়ে সুখটান দিতে দিতে হাঁটা। চোখে পড়লো সাদা বেডশিট উঠাতে কেউ ভুলে গিয়েছে (পুকুর পারে দড়ি লাগিয়ে কাপড় শুকানো হত)। কাছে যেতেই সাদা বেডশিট হাওয়া। চোখের ভুল ভেবে বাড়ির দিকে হাঁটা। কয়েক কদম যেতেই পুকুরে ঢিল পড়ল। উনি পেছনে তাকিয়ে কিছু দেখল না। কিছুদূর যাওয়ার পরে পুকুরে বিরাট পাথরখন্ড পড়ার মতো শব্দ। এবার আর পেছনে না তাকিয়ে না তাকিয়ে দ্রুত সামনে হাঁটা। আবার ঢিল পড়লো, এবার তার পেছনে কয়েক হাত দূরে। উনি এবার ভয় পেয়ে দৌড় দিল। ঊর্ধ্বশ্বাসে বাড়ির বারান্দায় ঢুকে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

  • সাহিত্য শ্রেণী : ভৌতিক, সাহিত্যকর্ম
  • শব্দ সংখ্যা : 1
  • সংস্করণ : ফেব্রুয়ারি 26, 2025
  • পুনঃপ্রকাশিত : না
Page 1 of 1
🛠️ Change